নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের ১৩৩ রানের লড়াকু ইনিংস, তার পর বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং—সব মিলিয়ে আজকের ম্যাচটা ছিল দারুণ সাফল্যময়। ম্যাচ শেষে অধিকাংশ চোখে যে নামটা সবচেয়ে উজ্জ্বল, সেটা নিঃসন্দেহে জাকের আলী অনিক। ৪৮ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে দলকে টেনেছেন শেষ পর্যন্ত। তবে ম্যাচ গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে উঠে আসে আরেকজনের নাম—শেখ মাহেদী হাসান। ব্যাট ও বল—দুই বিভাগেই অবদান রেখে ছায়ানায় থেকে গড়ে দিয়েছেন দলের জয়ের ভিত্তি।
জাকের আলীর ইনিংস: কৌশলী কিন্তু বিতর্কিত?
জাকের আলীর ব্যাট থেকে আসে ৫৫ রান, ১টি ছক্কা ও ৫টি চার সহ ৪৮ বলে। স্ট্রাইক রেট ১১৪.৫৮। ইনিংসের শুরুর দিকে বেশ স্লো ছিলেন তিনি—সম্ভবত পরিকল্পনা ছিল শেষদিকে হাত খোলার। কিন্তু অনেক বলেই সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এক-দুই রান না নেওয়ার প্রবণতা কিছুটা প্রশ্নবিদ্ধ। এমন বেশ কিছু বল ছিল যেখানে ডট না খেলে সহজেই সিঙ্গেল নেওয়া যেত।
তবে ম্যাচের প্রেক্ষাপটে তার ইনিংসটি গুরুত্বপূর্ণ—বিশেষ করে শেষ দিকে গিয়ার পাল্টে খেলার সাহসী প্রয়াসটি ম্যাচের রঙ বদলে দেয়। নিজের উইকেটও অদ্ভুত এক শট খেলে হারাননি, বরং শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন। অথচ ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটিতে পৌঁছানোর পর একবার ক্যাচ উঠেছিল, যা হাতছাড়া করেন হাসান নওয়াজ। ভাগ্য সহায় ছিল, তাই ইনিংসের গতি টিকে থাকে।
মাহেদী হাসান: নিঃশব্দ অবদান, দ্বিমুখী ধারালো পারফরম্যান্স
একদিকে জাকের যখন স্টেজ তৈরি করছিলেন, তখন মাহেদী হাসান ছিলেন আড়ালের নায়ক। ব্যাট হাতে খেলেন ২৫ বলে ৩৩ রানের কার্যকর ইনিংস, যেখানে ছিল ২টি চার ও ২টি ছক্কা। তার স্ট্রাইক রেট ছিল ১৩২.০০—মাঝের ওভারগুলোতে ইনিংস এক্সিলারেট করার দায়িত্বটি যে কাঁধে তুলে নিয়েছেন, তা পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট।
কিন্তু মাহেদীর আসল মূল্যায়নটা আসে বোলিং পারফরম্যান্সে। নির্ভরযোগ্য এক স্পেলের মধ্যে দিয়ে ৪ ওভারে মাত্র ২৫ রান দিয়ে তুলে নেন ২টি উইকেট। ইকোনমি রেট মাত্র ৬.২৫। ১১টি ডট বল, একটি ওয়াইড, কোনো নো বল না দেওয়া—সব মিলিয়ে একজন আদর্শ টি-টোয়েন্টি বোলারের নিদর্শনই যেন উপস্থাপন করলেন মাহেদী। তার শিকার হন হাসান নওয়াজ ও আরেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার।
পারফরম্যান্সের মাপকাঠি কি শুধু রান?
একটি ম্যাচে নির্ধারক ভুমিকা রাখতে পারে একটি ভালো ইনিংস। তবে যদি সেই ম্যাচে কেউ ব্যাটিং এবং বোলিং—উভয় ভূমিকায় সমান কার্যকর হন, তাহলে তার গুরুত্ব দ্বিগুণ হয়ে যায়। সেই হিসেবে শেখ মাহেদী হাসান নিঃসন্দেহে দিনটির অলরাউন্ড পারফর্মার।
জাকেরের ইনিংসটি প্রাসঙ্গিক এবং দলের সংগ্রহে বড় অবদান রাখলেও, ব্যাট-বল মিলিয়ে মাহেদীর ভূমিকা আরও ভারসাম্যপূর্ণ এবং ম্যাচের পরিণতিতে গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে।
এই ম্যাচ একক কোনো নায়কের গল্প নয়। এটি সম্মিলিত পারফরম্যান্স, পরিকল্পনার বাস্তবায়ন, এবং পরিস্থিতির সঠিক মূল্যায়নের গল্প। জাকের আলী অনিক নিজের ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস খেলে যেমন নিজের সামর্থ্য প্রমাণ করেছেন, ঠিক তেমনি শেখ মাহেদী হাসান যেন ছিলেন নীরব এক সৈনিক—যার ছায়ায় ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের জয়।
জাহিদ/
নিউজটি আপডেট করেছেন : Jatiyo Potrika
বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি সিরিজ:
জাকের না মাহেদী—কে ছিল আজকের ম্যাচের আসল নায়ক?
- আপলোড সময় : ২৩-০৭-২০২৫ ০৮:২০:৫০ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৩-০৭-২০২৫ ০৮:২০:৫০ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ